ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১০:০৪ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৮ বার
অন্তর্বর্তী সরকার পরিবেশ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা মানুষের অধিকার রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বুধবার (২ ডিসেম্বর) সাভারের ব্র্যাক সিডিএম-এ অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন এনভায়রনমেন্টাল জাস্টিস এ ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, পৃথিবী ও মানুষের সুরক্ষায় তার সারাজীবনের লড়াই একই করপোরেট দখলদারিত্ব থেকে মুক্তি, অবহেলিত জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন এবং উন্নয়নে পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
সেন্ট মার্টিনে কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা রিজওয়ানা জানান, সেন্ট মার্টিন দ্বীপের নাজুক প্রবাল বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় সরকার পর্যটন নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোর করেছে।
তিনি বলেন, ‘প্রবাল পুনরুজ্জীবনের জন্য সেন্ট মার্টিনে কঠোর নিয়ন্ত্রণ ছাড়া বিকল্প নেই।
একইসঙ্গে বিপজ্জনক মাত্রার বায়ুদূষণ কমাতে জোরদার অভিযান চলছে, যদিও কাঙ্ক্ষিত ফল পেতে সময় লাগবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিন ব্যাগের নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে কার্যকর করা, প্লাস্টিকমুক্ত অঞ্চল সম্প্রসারণ, নদী ও বনজ বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার, বন্যপ্রাণী সুরক্ষা সবই এখন সরকারের অগ্রাধিকার।
বনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অধিকার সুরক্ষায় সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে তিনি জানান, নতুন অনুমোদিত বন নীতিতে অবাধ, পূর্বানুমতিপ্রাপ্ত ও অবহিত সম্মতির বিধান একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
ফেনীর নজিরবিহীন বন্যা, নদীভাঙন, লবণাক্ততা বৃদ্ধি এবং সীমান্তপারের আকস্মিক পানিপ্রবাহসহ দেশের জলবায়ু ঝুঁকির চিত্র তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, জলবায়ু ন্যায়বিচার এখন আমাদের কাজের কেন্দ্রবিন্দু।
জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক অর্থায়ন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপগঠন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
মেগা প্রকল্পের ওপর অতির্ভরতা কমিয়ে জলবায়ু–ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান উপদেষ্টা। তিনি নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতি সরকারের অঙ্গীকার তুলে ধরে বলেন, সব সরকারি দপ্তরে কার্যকর রুফটপ সোলার স্থাপনের নির্দেশ ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে।
পরিবেশ ন্যায়বিচার একটি মূল্যবোধনির্ভর ধারণা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানুষ ও প্রকৃতিকে সত্যিকার মূল্য দিতে চাইলে কার্যক্রমেও তার প্রতিফলন ঘটাতে হবে।
তিনি আশা করেন পরবর্তী নির্বাচিত সরকারও এসব সংস্কার ধরে রাখবে এবং আরও সামনে এগিয়ে নেবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ; ইউএনডিপি বাংলাদেশের অ্যাসিস্ট্যান্ট রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ সরদার এম. আসাদুজ্জামান; সুইডেন দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি নায়োকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রম; বেলার চেয়ারম্যান মির্জা কামরুল হাসান এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাসলিমা ইসলাম।