ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১০:১১ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৪ বার
একদিকে মাত্র ১০০ শয্যার হাসপাতাল ভবনে প্রতিদিন বাড়ছে রোগীর চাপ, অন্যদিকে ৫৭ কোটি টাকায় নির্মিত দেড়শ শয্যার নতুন আটতলা পড়ে আছে অচল। আধুনিক চিকিৎসা সুবিধার প্রত্যাশায় নির্মাণ করা হলেও পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের নতুন ভবনটি এখনও ব্যবহার উপযোগী হয়নি। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন জেলার সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, পুরোনো ভবনের করিডোর, বারান্দা ও ওয়ার্ড জুড়ে রোগীদের উপচে পড়া ভিড়। অনেকে শয্যা না পেয়ে মেঝেতে শুয়েই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
২০২৪ সালে দেড়শ শয্যার নতুন ভবন নির্মাণ শেষ হলেও সেখানে এখনো কোনো বিভাগ পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হয়নি। বারবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও সমাধান মেলেনি। ফলে স্থানীয় রাজনৈতিক দল, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ নিজেরাই ভবনটি চালুর উদ্যোগ নিয়েছেন। ইতোমধ্যে গড়ে উঠেছে ২৩ লাখ টাকার তহবিল; এখনও চলছে অর্থসংগ্রহ।
জানা গেছে, ভবন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৫৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। পুরোনো ভবনে প্রতিদিন অন্তত ৫০০ জনের বেশি রোগী চিকিৎসাসেবা নেন, যা বাড়তি চাপ সামলাতে পারছে না।
জগদল এলাকার রোকেয়া বেগম বাংলানিউজকে বলেন, তিন দিন ধরে ছেলে ভর্তি। বেড নেই, টয়লেট ব্যবহার করা যায় না। নতুন ভবন চালু না হলে রোগীরা যাবে কোথায়?
আমকাঠাল এলাকার ইদ্রিস আলী বলেন, ঠান্ডার মধ্যে স্ত্রীকে মেঝেতে শুইয়ে স্যালাইন দিতে হয়েছে। এভাবে মানুষ সুস্থ হবে কীভাবে?
আরেক স্বজন তাসলিমা আক্তার বলেন, বাইরে থেকে ভবনটা দেখে বড় হাসপাতালে মনে হয়, কিন্তু ভেতরে নেয়ার মতো কোনো ব্যবস্থা নেই। জেলাবাসীর কষ্ট বাড়ছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক মোকাদ্দেছুর রহমান সান বলেন, নতুন ভবন বন্ধ পড়ে থাকার কারণে রোগীরা অমানবিক পরিস্থিতিতে রয়েছেন। তাই স্থানীয় মানুষের অর্থায়নে একটি বিভাগ চালুর কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, জনগণকে কেন নিজের টাকায় সরকারি ভবন চালু করতে হবে?
জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান জাপান বলেন, সরকারি উদাসীনতায় রোগীরা দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন। জনগণ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এগিয়ে এসেছে। ভবনটি চালু হলে চাপ অনেক কমবে।
পঞ্চগড়ের সিভিল সার্জন ডা. মো. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, জনবল ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে নতুন ভবন চালু করা যায়নি। স্থানীয়দের সহায়তায় মেডিসিন বিভাগ স্থানান্তরের কাজ চলছে। এতে কিছুটা স্বস্তি মিলবে।
তিনি আরও জানান, সরকারি ব্যবস্থাপনায় আগামী এক বছরের মধ্যে নতুন ভবনের পুরো কার্যক্রম চালু করার লক্ষ্যে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।